উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি তিন শুল্ক স্টেশনে
- আপলোড সময় : ২২-০৩-২০২৫ ০১:৪৩:২২ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২২-০৩-২০২৫ ০১:৪৩:২২ পূর্বাহ্ন

বিশেষ প্রতিনিধি ::
তাহিরপুরে উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের তিনটি শুল্ক স্টেশন বড়ছড়া, চারাগাঁও এবং বাগলী দিয়ে কয়লা ও চুনাপাথর আমদানিতে প্রতি বছর দেড়শো থেকে দু'শ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হলেও দীর্ঘ দুই যুগেও শুল্ক স্টেশনে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।
জানাযায়, সুনামগঞ্জের এই তিন শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারতীয় ট্রাকে কয়লা ও চুনাপাথর আমদানি করা হয়। এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাচ্ছে সরকার। এসব মালামাল পরিবহনে শুল্ক স্টেশনগুলোতে আজও নির্মাণ হয়নি পাকা সড়ক। শুল্ক স্টেশনের অবকাঠামোসহ গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত সড়কগুলোও বেহাল অবস্থায় রয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের বড়ছড়া, চারাগাঁও ও বাগলী শুল্কস্টেশন থেকে সরকারকে বছরে দেড়শো থেকে দুশো কোটি টাকা রাজস্ব দেয়া হলেও দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়নবঞ্চিত রয়েছে এই তিন শুল্কস্টেশন। ১৯৯৪ সালে বিএনপি সরকারের আমলে তিনটি শুল্কস্টেশনের কার্যক্রম চালু হয়। যেটি চালুতে ভূমিকা রাখেন প্রয়াত সংসদ সদস্য নজির হোসেন। তৎকালীন শুল্কস্টেশন এলাকার রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো উন্নয়ন হলেও বিগত ১৫ বছর উন্নয়নের তেমন কোন ছোঁয়া লাগেনি। পণ্য খালাসের সড়কগুলোর বেহাল অবস্থা। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের খানাখন্দ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ট্রাকবোঝাই মালামাল পরিবহন করতে হয় ব্যবসায়িদের। এতে গুণতে হয় দ্বিগুণ টাকা। ব্যবসায়ীদের জন্য নেই আবাসন কিংবা বিশ্রামাগারের ব্যবস্থা। তাই পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধার অভাবে বিমুখ হন অনেক বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান।
সাধারণ ব্যবসায়ীরা মনে করেন ব্যবসার পরিধি বাড়াতে এই তিনটি শুল্কস্টেশনের রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো উন্নয়ন করলে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাজী শামছুল হক বলেন, বিগত সময়ে আমাদের মতো প্রকৃত ব্যবসায়ীদের কোণঠাসা করে রাখা হয়েছিল। শুল্কস্টেশনের রাস্তাঘাটের কোনো উন্নয়ন হয়নি।
ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ স¤পাদক ডা. শামস উদ্দিন বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বিএনপি ও জামায়াতের ব্যবসায়ীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়েছে। চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অনেকেই বাড়ি-গাড়ির মালিক হয়েছেন। কিন্তু শুল্ক স্টেশন এলাকার কোনো উন্নয়ন করা হয়নি। ব্যবসায়ীদের বসার স্থান নেই। আবাসনের কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। রাস্তার অবস্থা খারাপ থাকায় পণ্য পরিবহনে অধিক ব্যয় করতে হয়।
কয়লা ব্যবসায়ী হাজী ফরিদ উদ্দিন বলেন, সরকার বছরে ২০০ কোটি টাকার রাজস্ব নেয় কিন্তু শুল্ক স্টেশনের উন্নয়নে কোনো টাকা ব্যয় করেনা। ব্যবসায়ীরা নিজেদের মতো করে রাস্তাঘাটের মেরামত করেন। আমরা মনে করি বিষয়টি নিয়ে বর্তমান সরকারকে এখনই ভাবতে হবে।
এদিকে তাহিরপুর উপজেলার তিন শুল্ক স্টেশনে আদায়কৃত রাজস্বের একটি অংশ সংশ্লিষ্ট শুল্কস্টেশন এলাকার উন্নয়নে ব্যয় করতে সরকারের নিকট দাবি করেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী খসরুল আলম। তিনি বলেন, বিগত সময় শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে অনেকেই অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সরকারকে নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে। এখান থেকে যে পরিমাণ রাজস্ব সরকার পায় তার অন্তত ২০% উন্নয়ন ব্যবহার করতে হবে। তবেই ব্যবসায়ীরা ব্যবসার অনুকূল পরিবেশ পাবেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ